গিজার নাকি হিটিং রড কোনটিতে বিদ্যুৎ খরচ বেশি?

2 hours ago 5

শীতের সকালে বাসায় গরম পানির প্রয়োজন হলে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন গিজার ব্যবহার করবেন, নাকি সস্তা ও ছোট্ট একটি হিটিং রডেই কাজ চালিয়ে নেবেন? দুটোই পানি গরম করার বৈদ্যুতিক যন্ত্র, কিন্তু বিদ্যুৎ খরচ কি এক রকম? আসলে না। দুটির কাজের পদ্ধতি, নিরাপত্তা, পানির গুণগত মান এবং বিদ্যুৎ খরচ সব ক্ষেত্রেই পার্থক্য আছে। চলুন সহজভাবে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যাক।

গিজারের কাজের ধরন
গিজার মূলত একটি ইনসুলেটেড ট্যাংক, যার ভেতরে থাকা পানি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গরম হয় এবং কিছুক্ষণ ধরে গরম থাকে। গিজারের হিটিং কয়েল শক্তিশালী হওয়ায় পানি তুলনামূলক দ্রুত গরম হয়।

সাধারণত গিজারে ব্যবহৃত ক্ষমতা: ১,৫০০ থেকে ২,০০০ ওয়াট। ট্যাংকে পানি গরম হওয়ার পর থার্মোস্ট্যাট স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিটার বন্ধ করে দেয়। ইনসুলেশন থাকায় গরম পানি অনেকক্ষণ গরম থাকে।

হিটিং রডের কাজের ধরন
হিটিং রড পানির ভেতর সরাসরি দিয়ে গরম করে। এতে কোনো ট্যাংক নেই, ইনসুলেশনও নেই। আশা করা যায় দ্রুত গরম হবে, কিন্তু বাস্তবে পানি গরম হতে বেশি সময় লাগে।

সাধারণত ক্ষমতা: ১,০০০ থেকে ২,০০০ ওয়াট। যতক্ষণ রড পানিতে থাকে বিদ্যুৎ খরচ চলতেই থাকে। পানি বারবার ঠান্ডা হয়ে যায়, ফলে বারবার চালু রাখতে হয়

কোনটিতে খরচ বেশি?
অনেকে মনে করেন হিটিং রড ছোট, তাই কম বিদ্যুৎ খায়। এটা পুরোপুরি সঠিক নয়। বিদ্যুৎ খরচ নির্ভর করে ওয়াট, ব্যবহারের সময় এবং তাপ ধরে রাখার ক্ষমতার উপর। ধরি, ১৫ লিটার পানি গরম করতে হবে: গিজারে ১৫-২০ মিনিটে পানি গরম হয়। হিটিং রডে একই পানিতে লাগতে পারে ২৫-৩৫ মিনিট বা তার বেশি।

তাহলে ১৫০০ ওয়াট গিজার ২০ মিনিট চললে খরচ ০.৫ ইউনিট। যদি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট দাম ৭ টাকা ৫০ পয়সা তাহলে এটি দিনে ৩ টাকা ৭৫ পয়সা খরচ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মাসে গিজার ব্যবহার করার খরচ প্রায় ১১২ টাকার মতো হতে পারে।

১৫০০ ওয়াট হিটিং রড ৩০-৩৫ মিনিট চললে খরচ ০.৭৫-০.৯ ইউনিট। যদি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট দাম ৭ টাকা ৫০ পয়সা হয়, তাহলে এটি দিনে ৬ থেকে ৭ টাকা খরচ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মাসে ইমারশন রড ব্যবহার করার খরচ প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত থাকতে পারে।

অর্থাৎ একই পরিমাণ পানিতে হিটিং রডে গিজারের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়। একবার গরম হওয়ার পর গিজার অফ থাকে, রডে থাকে না। মনে প্রশ্ন আসতে পারে কেন হিটিং রডে বেশি খরচ? পানি ধরে রাখার ট্যাংক বা ইনসুলেশন নেই, প্রতিবার পানি ঠান্ডা হলে আবার গরম করতে হয়, তাপ সরাসরি পানির মধ্যে ছড়িয়ে যায় ফলে বিদ্যুৎ খরচও বেশি হয়।

আরও পড়ুন
যেসব লক্ষণে বুঝবেন গিজার বদলানোর সময় হয়েছে
শীতে হিটার ছাড়াই ঘর গরম রাখতে পারবেন যেভাবে

কেএসকে/জেআইএম

Read Entire Article