‘ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম ডিগ্রি নিতে, বাড়ি ফিরলো লাশ হয়ে’

2 weeks ago 7

‘ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম ডিগ্রি অর্জনের জন্য, কিন্তু সে বাড়ি ফিরে এসেছে লাশ হয়ে। আপনাদের কাছে একটাই চাওয়া, আমার ছেলের হত্যাকারীর যেন দ্রুত বিচার হয়। এছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনের বাবা মোবারক হোসেন।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ও জোবায়েদ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম, ট্রেজারার অধ্যাপক সাবিনা শারমীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ্ উদদীন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন
ত্রিভুজ প্রেমের জেরে জোবায়েদ হত্যা, পরিকল্পনা এক মাস আগে
ছাত্রদলে কিছু খারাপ আছে, সেটা স্বীকার করে রাজনীতি করি: রাকিব

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, হাসিব দেশকে স্বৈরাচার মুক্তির জন্য ভূমিকা রেখেছে। তার সেই লক্ষ্য পূরণ করতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে জোবায়েদের মৃত্যুর সঠিক বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে। এতে তার আত্মা, পরিবার সবাই শান্তি পাবে এবং ভবিষ্যৎে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবার সহযোগীয় এটার দ্রুত প্রতীকার পেয়েছি। আমরা খবর পেয়েছি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে দেওয়া হবে। আজ সকালেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বনামধন্য একটি উকিল দেওয়ার ফাইল তৈরি করেছি। আমরা নিয়মতান্ত্রিক যত উপায় আছে, সবদিক থেকে চেষ্টা করবো। তাদের পরিবারের প্রত্যাশা সুষ্ঠু বিচার সুনিশ্চিত করতে পারি।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, বলছি না যে আমাদের শতভাগ নেতাকর্মী জুবায়েদ ও সাম্যের মতো নৈতিক চরিত্রের। স্বল্প সময়ে আমাদের অনেক নৈতিক চরিত্রের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা স্বীকার করি, কিছু খারাপ আছে, তবে বেশিরভাগই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী, আমরা সেটা মেনে রাজনীতি করি।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১৪২ শহীদ হয়েছেন। কিন্তু জুলাই পরবর্তী সময়ে সাম্য ও জোবায়েদের মতো নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। পারভেজ হত্যার পর প্রশাসন গড়িমসি করেছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, জোবায়েদ ও হাসিবুরের এই দোয়া মাহফিলে একটি কবিতা লাইন মনে পড়ে যায়, ‘এমন জীবন তুমি করিবে গঠন, মরণে হাসিবে তুমি কাদিবে ভুবন’। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বাবা-মায়ের পর শিক্ষক সমাজই শিক্ষার্থীদের দুঃখ-কষ্ট নেয়। কিন্তু মৃত্যু কষ্টের। আমরা যাদের আঘাত করি না, তাদের শোক সভায় আমাদের উপস্থিত হতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত কষ্টের।

টিএইচকিউ/ইএ/জিকেএস

Read Entire Article