জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসপিএ) নতুন কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে বর্ণিল অনুষ্ঠানে বোতাম টিপে বিএসপিএর নতুন কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল এবং রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও বাফুফের সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান রাজিব ও সাধারণ সম্পাদক মো. সামন হোসেন।
বিএসপিএর তিন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে সংগঠনের আজীবন সদস্য ইকরামউজ্জমান, সাবেক সভাপতি মাহমুদ হোসেন খান দুলাল ও মোস্তফা মামুন দেশের প্রাচীনতম ক্রীড়া সাংবাদিক সংগঠনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এ অনুষ্ঠানে আটজন সাবেক সভাপতি ও পাঁচজন সাধারণ সম্পাদককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ‘হোম অব বিএসপিএ’ উদ্বোধন করতে এসে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বিএসপিএ হচ্ছে আমাদের সেই ক্রীড়ালেখক সমিতি, যারা ১৯৯২ সালে আমাকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল যে, আমি একজন ভালো ক্রিকেটার। তাদের চোখে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ হয়েছিলাম। বিএসপিএকে ধন্যবাদ জানাই, সে সময় যেভাবে আমাকে ও ক্রীড়াঙ্গনকে পুরস্কৃত করেছিল, আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল। ক্রিকেট ও বিএসপিএর নতুন যাত্রা শুভ হোক।’
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমরা অনেক কিছু ভুল করতে পারি বা ভুলে যেতে পারি। তাই আপনাদের লেখার কারণে ইতিহাসের পাতায় আমরা টিকে থাকি, স্বীকৃতি পাই। আমরা অনেক কিছুই করি। তবে আপনারা প্রতিটি মুহূর্ত রেকর্ড করে রাখেন। আমি বিশ্বাস করি, আগামীতে বিএসপিএর নেতৃত্ব বাংলাদেশে একটি স্পোর্টস মিউজিয়াম দেখা যাবে। বাংলাদেশের স্পোর্টস ইকোনমি এগিয়ে নেওয়ার জন্য ক্রীড়া সংগঠনগুলো ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। আমি বিশ্বাস করি, এই কথাগুলো বিএসপিএর মাধ্যমে ছড়িয়ে যাবে। বিএসপিএর জন্যই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। আমি বিএসপিএকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
বিএসপিএর নতুন কার্যালয় নির্মাণে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও ফুটবল সংগঠক নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের জন্য একটি অত্যন্ত ভালো দিন। আজকের এই সময় আমি তাদের আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা এখন সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে বাস করছি। আমরা কিন্তু অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি। এ সামাজিক অবস্থান ঠিক করতে হলে কেউই এককভাবে পারবে না। যেকোনো ধরনের স্পোর্টস সংগঠনগুলোর কাজ হলো জাতীয় ও সামাজিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা। আজকে যদি তরুণ সমাজকে আমরা খেলার মধ্যে রাখতে পারি, তাহলে জাতীয় অনেক সমস্যা সমাধান করতে পারব। আপনাদের সঙ্গে আমরা আছি। আপনাদের সঙ্গে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। বিএসপিএর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।’

জাতীয় স্টেডিয়ামের আঙিনায় বিএসপিএ কাটিয়েছে ৬৩ বছর। ক্রীড়া সাংবাদিকদের সেকেন্ড হোম। প্রেস বক্স বিয়ন্ড প্রেস বক্স। বাংলাদশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের এই গণ্ডিটা বেড়ে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে, লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এবার আর নামে শুধু নয়, আক্ষরিক অর্থেই সেকেন্ড হোম বিএসপিএ প্রেস বক্স।
স্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল ২০২২ সালে। বিএসপিএ ৬০ বছর পূর্তির আয়োজনে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে বরাদ্দ মেলে জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রায় তিন হাজার স্কয়ার ফিটের এ জায়গাটি। এরপর থেকেই অপেক্ষা। এ ধুলোর আস্তরণ সরে শেষ ছয় মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বপ্ন এখন রূপ নিয়েছে বাস্তবে।
প্রকল্পের ডিজাইন করেছেন দেশের বিখ্যাত স্থাপত্যবিদ ড. নিজামউদ্দিন। তিনি নিজেও বিএসপিএর সিনিয়র সদস্য। কী নেই এ আধুনিক কার্যালয়ে! সুপ্রশস্ত লবি, সবুজের ছোঁয়া, স্পোর্টস রুম, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ, অ্যাডমিন ও অ্যাকাউন্টস রুম, মেম্বারস লাউঞ্জ, কনফারেন্স রুম, লাইব্রেরি, স্টুডিও, কিচেন, দুটি ওয়াশরুম ও স্টোররুম। বিশ্রাম, বিনোদন, কাজের সুযোগ, আধুনিক স্থাপত্যশৈলী আর সঙ্গে তো থাকছেই নয়নাভিরাম স্টেডিয়াম ভিউ। এক পা বাড়ালেই জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচা। ক্লান্তি দূর করার উপশমও আছে এ কার্যালয়ে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথিরা জাতীয় স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিএসপিএর নতুন কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
আরআই/আইএইচএস/

7 hours ago
9









English (US) ·