ঝড়ে পড়া গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে জটিলতা

5 days ago 6

আমলাতান্ত্রিক লালফিতা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা জানালেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলন। এ বিষয়ে ২৮ অক্টোবর সকাল ৮টা ১০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। ঝড়ে পড়া একটি গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ফেসবুক পোস্টে।

মাহবুব কবীর মিলন লিখেছেন, ‘আমলাতান্ত্রিক লালফিতা সম্পর্কে যাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তাদের জন্য একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলাম। না পড়লে মিস করবেন সবাই।

আমি তখন কুড়িগ্রাম রাজারহাটের ইউএনও। আমাদের এক তহশিল অফিসের সামনে বিশাল এক গাছ ঝড়ে পড়ে গেল। পথচারীদের চলাচলে রাস্তা গেল বন্ধ হয়ে।

আমি পরের দিন ভোরে লোকজন জোগাড় করলাম যন্ত্রপাতিসহ। স্পটে গিয়ে কাটা শুরুর আগে আমার অফিসের স্টাফরা দৌড়ে এসে বলল, আরে স্যার করেন কী! বিপদে পড়বেন তো!

আরও পড়ুন
হাসপাতালে বিয়ে নতুন এক ইতিহাস
মনোনয়ন বাণিজ্যের পিলে চমকানো কাহিনি

কিসের বিপদ! কেন বিপদ! স্যার অনুমতি ছাড়া গাছে হাতও দেওয়া যাবে না। কার অনুমতি? আর আমরা তো কাঠ চুরি করবো না। সরিয়ে অফিস চত্বরেই রেখে দেবো। পরে নিলামে বিক্রি করা হবে, যেহেতু সরকারি গাছ।

না স্যার, পারবেন না। চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার স্যারের অনুমতি লাগবে। আমরা চিঠি লিখবো ডিসি স্যারের কাছে। সেই চিঠি যাবে রাজশাহী। সেখান থেকে অনুমতি আসবে আবার ডিসি স্যারের কাছে। এরপর আমরা সেই কপি পেলে কাটতে পারবো।

আমি কতক্ষণ হা হয়ে থেকে বললাম, ততদিনে তো এই গাছের কিছুই থাকবে না। সব চুরি করে সবাই কেটে নিয়ে যাবে। আলহামদুলিল্লাহ স্যার! বেঁচে গেলেন তাহলে। আমাদের কিছুই করা লাগল না। তবুও আপনি গাছে হাত দিতে পারবেন না।

কয়েকটা ডালপালা কেটে রাস্তা উন্মুক্ত করে আমি ফিরে এসে ওইদিনই চিঠি দিলাম। সময়টা মনে নেই। তবে অনেকদিন পর চিঠি পেলাম গাছ কাটার। বেশ কয়েকবার তাগিদ দেওয়ার পর। চিঠি ফাইলে রেখে দিলাম। আর ব্যবস্থা করা লাগেনি। আমার সেই কষ্ট জনগণ অনেক আগেই দূর করে দিয়েছিল।’

এসইউ/এএসএম

Read Entire Article