ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ অসুস্থ একই স্কুলের ১১ ছাত্রী

2 days ago 7

ঠাকুরগাঁওয়ে একই সময়ে ১১ ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ভুল্লী কুমারপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টায় প্রাত্যহিক অ্যাসেম্বলি শেষ করে ছাত্রীরা ক্লাসে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর একজন শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে। তার পরপর একই শ্রেণির আরও চারজন একই উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সহপাঠীরা চিৎকার দিলে শিক্ষকরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলো, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুল্লী বালিয়া ইউনিয়নের বড় বালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে মিম (১১), আনোয়ার হোসেনের মেয়ে লামিয়া (১২), সুমন ইসলামের মেয়ে মুসকান (১২), কুমারপুর গ্রামের সূর্য চন্দ্র বর্মণের মেয়ে দৃষ্টি (১১), শরিফুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া (১৩) ও যতিশ চন্দ্রের মেয়ে পূজা রাণী। তারা সবাই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানান, সকালে আমরা স্কুলের টিউবওয়েল থেকে পানি খেয়েছি। এরপর আমাদের মাথা ঘোরা, বমি ও পেটব্যথা শুরু হয়েছে। তবে ১১ জন নয় আর অনেকে অসুস্থ হয়ে যায়। তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রথমে একজন অসুস্থ হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম অ্যালার্জির সমস্যা। কিন্তু পরপর ১১ জনের একই উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে সবাইকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ অসুস্থ একই স্কুলের ১১ ছাত্রী

সুমন ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, সকালে মেয়েটা হাসি খুশি হয়ে স্কুলে গেছে। কিছুক্ষণ পর ফোনে শুনি সে নাকি অসুস্থ হয়ে গেছে, হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আরেকজন অভিভাবক আনোয়ার হোসেনের বলেন, এভাবে একসঙ্গে কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লো এটা খুবই চিন্তার বিষয়। আমরা চাই প্রশাসন বিষয়টা ভালোভাবে খতিয়ে দেখুক। যদি খাদ্যে কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাকিয়া আক্তার বলেন, কয়েকজন ছাত্রী শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসেছে। জিজ্ঞেস করে জানা যায়, অ্যাসেম্বলি শেষে তারা সবাই একই ধরনের বিস্কুট খেয়েছিল। তারপর থেকে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ছাত্রীদের অক্সিজেন দিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক সতর্কতা হিসেবে মুখে যে কোনো খাবার আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস আলী বলেন, ঘটনাটা একেবারে অপ্রত্যাশিত। সকাল পর্যন্ত সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ কয়েকজন ছাত্রী শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে পড়ে যায়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাসপাতালে পাঠাই।

ভূল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, খবর পেয়ে আমরা স্কুলে যাই। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তারা কী খেয়ে অসুস্থ হয়েছে তা তদন্ত চলছে।

তানভীর হাসান তানু/আরএইচ/জেআইএম

Read Entire Article