ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল করুন

1 day ago 2
ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল করুন

ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল করুন

রাজধানী

সমকাল প্রতিবেদক 2025-11-05

স্বার্থান্বেষী প্রভাবশালীদের চাপে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পেশাজীবীরা। তারা বলেছেন, এতে এই শহর হুমকির মুখে পড়বে। সরকারের উচিত ড্যাপ সংশোধন সম্পর্কিত নতুন প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল করা।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পরিবেশকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে এমন বক্তব্য উঠে আসে। এতে লিখিত বক্তব্য দেন পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মোহাম্মদ খান ও পরিবেশকর্মী আমিরুল রাজিব।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারবে ঢাকা শহরের জন্য ততটাই মঙ্গল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর এমনভাবে ঢাকা শহরকে ধ্বংসের সুযোগ দেওয়া হবে তা আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত।’

ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ১৫ বছর আগেও ঢাকা শহরে গণপরিবহনের ঘণ্টায় গড় গতি ছিল ২০ কিলোমিটার। এখন সেটা পাঁচ-ছয় কিলোমিটারে নেমেছে। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে যেভাবে ড্যাপ সংশোধন করা হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে এক-দুই কিলোমিটারে নেমে আসবে। ভবন করার ক্ষেত্রে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) বাড়িয়ে দেওয়া ঢাকা শহরের জন্য আত্মঘাতী। সংশোধিত ড্যাপে প্রতিটি এলাকায় ফার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এতে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ ১৭টি দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে ড্যাপ সংশোধন সম্পর্কিত প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল, পেশাজীবীদের নিয়ে যথার্থভাবে ড্যাপ সংশোধন, জলাভূমি রক্ষায় কঠোর অবস্থান গ্রহণ, জলাশয় দখলকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডির মতো এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও কমিয়ে দেওয়া এবং পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যবসায়িক স্বার্থের সংঘাত আছে এমন কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২২ সালে ড্যাপ অনুমোদনের পর তিন বছরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের চাপে দুবার সংশোধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশোধন করা হচ্ছে ঢাকা মহানগরীর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা। মূলত আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব ও ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ-আইএবির দাবির কাছে সরকার রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় ভবন নির্মাণে ফার, জনঘনত্ব  ও আবাসন ইউনিট বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সার্বিক বিচারে যা অপরিণামদর্শী। ঢাকা মহানগরীর বাসযোগ্যতা ও পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য এটা হুমকিস্বরূপ। পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন সামাজিক, পরিবেশবাদী, পেশাজীবী ও নাগরিক সংগঠনের মতামত ও দাবিকে উপেক্ষা করেই সরকার এই সংশোধনের পথে হাঁটছে। এতে জনবহুল ঢাকা শহরে উঁচু ভবনের সংখ্যা বাড়বে এবং ইতোমধ্যে স্থবির হয়ে যাওয়া শহরে পরিবহন, পরিষেবাসহ সব ধরনের নাগরিক সেবার ওপর অসহনীয় চাপ পড়বে। এই চাপ বহন করার ক্ষমতা এই শহরের নেই। এ ধরনের উদ্যোগ ঢাকা মহানগরীর বাসযোগ্যতাকে একেবারে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সহসভাপতি সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউছ পিয়া, পরিবেশকর্মী ইবনুল সাঈদ রানা ও জুরাইনে নাগরিক ভোগান্তি নিয়ে আন্দোলনকারী মিজানুর রহমান।

© Samakal
Read Entire Article