পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রেস ক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রশাসন ও প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ‘বিপ্লবের দিনলিপি’ শিরোনামে স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন হলে এ স্মারকগ্রন্থ উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে পাবিপ্রবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা শিথিলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবিপ্রবি উপাচার্য ড. এসএম আব্দুল-আওয়াল। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক, কবি ও যুগান্তরের সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ ড. মো. শামীম আহমেদ, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. হাছানাত আলী এবং পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আক্তারুজ্জামান আক্তার।
এ ছাড়াও বিশেষ আলোচক হিসেবে অংশ নেন দৈনিক যুগান্তরের সহ-সম্পাদক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের রাজনীতি ও নির্বাচন বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাঈদুর রহমান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক আব্দুল হাই শিকদার বলেন, সংবাদ হলো মানুষের খবর ও চিন্তার সংগ্রহ। আর পত্রিকা হলো সমাজের আয়না। শাসক সমাজ সংবাদ দেখলে ভীত হয়, কারণ সংবাদপত্র সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। সংবাদপত্র সাধারণ মানুষের স্কুল। পৃথিবীতে অনেক প্রাণী আছে, যাদের কোনো স্কুল নেই— তারা প্রকৃতির পাঠশালা থেকে শিক্ষা নেয়। তেমনি সংবাদপত্রই হলো মানুষের প্রকৃত পাঠশালা, যেখানে সমাজ প্রতিনিয়ত শেখে ও নিজেকে গড়ে তোলে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রায় ৭০ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, দুই হাজারের বেশি সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিক আবুল আসাদের মতো মানুষকেও তার নিজের চেম্বারে নির্যাতন করা হয়েছে।
কবি আব্দুল হাই শিকদার বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করতে হয়েছে। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চারটি মামলা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও অন্যান্য অভিযোগে। অথচ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। এ রাষ্ট্র গঠনে আমারও ভূমিকা আছে। একজন মুক্তিযোদ্ধাই পারে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার বিচার করতে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিব উভয়ের শাসনকালই ছিল বিভীষিকাময়, স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় ভরা সময়। আমাদের কর্তব্য হলো— দেশকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়া। সেই পথ হলো গণতান্ত্রিক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। যদি আমরা সে পথে অগ্রসর হই, তাহলে দেশের আকাশ থেকে অন্ধকার দূর হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ড. এসএম আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘নলেজ ইজ পাওয়ার’ আমি দৃঢ়ভাবে এটি বিশ্বাস করি। আপনি যত বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন, ততই আপনি নিজেকে, আপনার সমাজকে এবং আপনার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে দল, মত বা চিন্তার ভিন্নতা থাকতে পারে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের প্রশ্নে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সেমিনারের শেষে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিকথা নিয়ে ‘বিপ্লবের দিনলিপি’ শিরোনামে একটি স্মারকগ্রন্থ উন্মোচন করা হয়। অতিথিরা স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনার প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণাধর্মী সাংবাদিকতা চর্চায় আরও উৎসাহী হওয়ার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা, প্রেস ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 3 days ago
                        11
                        3 days ago
                        11
                    








 English (US)  ·
                        English (US)  ·