বিশ্বজুড়ে শুল্ক অস্থিরতা ও বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখছে বাংলাদেশ। এ প্রতিকূল সময়ে শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনকে ভবিষ্যতের প্রধান ভিত্তি হিসেবে দেখছেন পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (১২ মে) রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ডেনিম এক্সপো আয়োজিত সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তারা।
আইসিসিবিতে দুই দিনব্যাপী ডেনিম এক্সপোর ১৮তম আসরে বিশ্বের ১৩টি দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক, স্পেন, ইতালি, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র।
সেমিনারে পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বাজারে ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। এলডিসিভুক্ত হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে ‘এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)’ এবং ‘জেনারেলাইজড স্কিম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) আওতায় শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে। তবে ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার পর তা অব্যাহত থাকবে না। যদি বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তবে ২০২৯ সাল থেকে ইউরোপে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির ৫০ দশমিক ১৫ শতাংশ যায়।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে ২৬.৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এটি আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। একই সময়ে ভারতের প্রবৃদ্ধি ২৪.০৪ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৭.৪৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের ১৩.৯৬ শতাংশ ও চীনের ৪.১৮ শতাংশ।
মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, আমাদের এ প্রবৃদ্ধি এমন এক সময়- যখন ট্রাম্প প্রশাসন বৈশ্বিকভাবে উচ্চ শুল্কারোপ করেছে। অর্থাৎ অস্থির আন্তর্জাতিক বাজার ও শুল্ক নীতির মধ্যেও বাংলাদেশ তার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমার মতে, বাণিজ্য আলোচনার টেবিলে আমাদের শক্তি হবে আমাদের শিল্পের দক্ষতা উন্নয়ন, স্থায়িত্ব ও উদ্ভাবনে অগ্রগতি। কারণ আমাদের যেমন বাণিজ্য অংশীদারদের প্রয়োজন, তেমনি তাদের ভোক্তাদেরও আমাদের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, গত ডেনিম এক্সপোতে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের এক্সপোতে সব আলোচনা দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রেখে আয়োজন করা হয়েছে। এবারের আয়োজনের মূল বার্তা হলো— পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া, যার মাধ্যমে ২০২৯ এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শিল্পকে প্রস্তুত করা হবে।
দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ‘ওয়াশিং প্রক্রিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা প্রথমদিন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ডেনিম ট্রেসেবিলিটির ওপর একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
ইএআর/এমএএইচ/জেআইএম

                        5 months ago
                        36
                    








                        English (US)  ·