লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দর্শকদের চাওয়া অবশেষে পূরণ হলো। অধিনায়ক বাবর আজমের ৪৭ বলে ৬৮ রানের অনবদ্য ইনিংস ও পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বিধ্বংসী বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চার উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ ২–১ ব্যবধানে জিতে নিল পাকিস্তান।
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৯ রান তোলে। জবাবে পাকিস্তান ১৯তম ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে ১৪০ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয়।
দীর্ঘদিন পর নিজের পরিচিত ছন্দে ফিরলেন বাবর আজম। ইনিংসের শুরুতে সাইম আইউব শূন্য রানে ফেরায় চাপ পড়ে পাকিস্তানের ওপর; কিন্তু বাবর একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। নয়টি চারের মার সমৃদ্ধ তার ৬৮ রানের ইনিংসটি ছিল দৃঢ়তা ও নৈপুণ্যের প্রতীক। আগা সালমানের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটি গড়ে বাবর মূলত ম্যাচটিকে নিজের দখলে নিয়ে নেন।
তিনি বলেননি কিছু, কিন্তু তার ব্যাটই বলেছে— ‘আমি এখনও পাকিস্তানের সেরা।’
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শুরুতেই তাণ্ডব চালান শাহিন শাহ আফ্রিদি। তার প্রথম ওভারেই ফেরান কুইন্টন ডি কক ও লুয়ান্দ্রি প্রিটোরিয়াসকে। তৃতীয় উইকেটে তিনি প্রায় উইকেট তুলে ফেলেছিলেন, কিন্তু ডিআরএসে দেখা যায় বল স্টাম্পের ওপরে দিয়ে গেছে। তবুও শাহিনের আগুনে বোলিংয়ে প্রোটিয়ারা পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২২ রান তুলতে পারে—যা তাদের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন।
রিজা হেন্ড্রিকস, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস ও ফারেইরা ছোট ছোট ইনিংস খেললেও দক্ষিণ আফ্রিকা কখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শেষদিকে করবিন বোশের ২৩ বলে অপরাজিত ৩০ রান দলকে কিছুটা সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেয়। পরে বোলিংয়েও তিনি দারুণ লাইন-লেংথে বল করেন, কিন্তু বাবরের অভিজ্ঞতায় হার মানেন।
পুরো সিরিজ জুড়েই পাকিস্তানের দর্শকরা অধীর আগ্রহে বাবরের ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি যখন ক্রিজে এলেন, তখন গ্যালারি উল্লাসে ফেটে পড়ে। আর যখন বাবর অর্ধশতক পূর্ণ করেন, তখন গোটা গাদ্দাফি স্টেডিয়াম যেন একসাথে চিৎকার করে উঠেছিল— ‘ক্যাপ্টেন ইজ ব্যাক!’
এই জয়ে পাকিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টি সিরিজ জয় তুলে নিল। বাবর বললেন, ‘এটা দলের জয়। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। পাকিস্তানি সমর্থকদের ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৯/৯, ২০ ওভার (রিজা হেন্ড্রিকস ৩৪, করবিন বোশ ৩০*; শাহিন আফ্রিদি ৩/২৬, উসমান তারিক ২/২৬, ফাহিম আশরাফ ২/২৮)।
পাকিস্তান: ১৪০/৬, ১৯ ওভার (বাবর আজম ৬৮, আগা সালমান ৩৩; বশ ২/২৪, উইলিয়ামস ২/২৬)
ফল: পাকিস্তান জয়ী ৪ উইকেটে, সিরিজ: পাকিস্তান জিতল ২–১
ম্যাচসেরা: বাবর আজম (৬৮ রান, ৯ চার)
সিরিজসেরা: শাহিন শাহ আফ্রিদি (৩ ম্যাচে ৮ উইকেট)
আইএইচএস/

14 hours ago
6









English (US) ·