বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী ডা. সানসিলা

2 hours ago 5

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে বিভিন্ন দল থেকে যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে সবার কম বয়সি ছিলেন ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা। ১৯৯৩ সালের ২২ জুন জন্ম নেওয়া সানসিলা এবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনেও শেরপুর-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী। সদ্য ত্রিশের কোটায় পা রাখা এই চিকিৎসক বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।

শেরপুর-১ (সদর) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন ডা. প্রিয়াঙ্কা। তিনি শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হযরত আলীর মেয়ে। প্রিয়াঙ্কা ২০০৮ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন ২০১০ সালে। আর এমবিবিএস পাস করেন ২০১৬ সালে।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ হযরত আলী কারাগারে থাকার কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কাকে প্রার্থী করে বিএনপি। সেই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ দুর্গের ভিত কাঁপিয়ে দেন। সেসময় আওয়ামী লীগের হামলা-ভাঙচুর উপেক্ষা করে তীব্র প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করে সারা দেশে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। সেই নির্বাচনে দুপুর ১২টার মধ্যে ৩৫ হাজার ভোট পেলেও কারচুপির অভিযোগ এনে অবশেষে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান ডা. প্রিয়াঙ্কা।

ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা এবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। শেরপুরের চায়ের দোকান থেকে অফিস পাড়া, সব জায়গায় প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে এবার বিপুল ভোটে বিজয়ী করে ডা. প্রিয়াঙ্কাকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যাবেন তারা।

ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ২০১৮ সালে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে শেরপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করেছিলাম। সেই সময় আমি শেরপুর সদরের সর্বস্তরের মানুষের চোখে ধানের শীষের জনপ্রিয়তা ও ভালোবাসা দেখেছি। তারা মাত্র এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে যে পরিমাণ ভোট আমাকে দিয়েছিল তা দেখেই বোঝা যায় যে, তারা ধানের শীষ এবং আমাকে কতটা ভালোবাসে। তারই পরিক্রমায় এবারও আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এর জন্য আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানাই।

আওয়ামী লীগ ভোটচোর মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আমি ভোট কারচুপির জোরালো প্রতিবাদ করেছিলাম। যা সারা দেশে আলোচিত হয়েছিল। ওই প্রতিবাদে শেরপুরকে চিনিয়ে দিয়েছিলাম। মানুষকে বুঝিয়েছি আওয়ামী লীগ ভোটচোর।

এদিকে দলের মনোনয়ন বঞ্চিতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই একটি আসনে অনেকগুলো প্রার্থী থাকতে পারে। প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। আমাদের এখানেও একাধিক প্রার্থী ছিল। আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেক প্রার্থীই ধানের শীষকে ভালোবাসেন এবং মন থেকে দল করেন। কেন্দ্র যেহেতু আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে তাই আমি বিশ্বাস করি বাকি সব প্রার্থী আমাকে সহযোগিতা করবেন এবং ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবেন। ইনশাআল্লাহ শেরপুর সদর আসন থেকে এবার আমরা ধানের শীষকে বিজয়ী করবো এবং সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করবো।

শেরপুর নিয়ে তিনি বলেন, পিছিয়ে থাকা এ জনপদে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও কৃষি খাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ তাদের জন্য আমার আলাদা কিছু পরিকল্পনা থাকবে। এছাড়াও বড় বড় প্রকল্পে নারীদের বেশি অংশগ্রহণ করার সুযোগ তৈরি করা হবে। সবাইকে নিয়েই একটি মডেল শেরপুর গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ।

শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দলের মহাসচিব শেরপুরের তিনটি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনে শেরপুরের তিনটি আসনই বিএনপির হবে। আর কনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় উঠে আসা ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা সবার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন বলে আমি মনে করি। একজন নারী নেত্রীর সব গুণাগুণ তার মধ্যে রয়েছে। আমরা আশা করি প্রিয়াংকা সর্ব্বোচ্চ ভোট পেয়ে রেকর্ড অর্জন করবেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও সাংবাদিক মরহুম খোন্দকার আব্দুল হামিদ। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী সাবেক উপসচিব মরহুম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। এরপর থেকে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া।

মো. নাঈম ইসলাম/এফএ/এমএস

Read Entire Article