বিচারকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি ফুলকোর্ট সভা

5 hours ago 9

ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ যেন মামলা গ্রহণ না করে- এ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ দেওয়ার ঘটনায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টর আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের সমন্বয়ে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের আলোচিত মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার।

রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের ঘটনার ৩৮ দিন পর কেন মামলা করা হয়েছে, সে বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। ভবিষ্যতে সঠিক তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেন আদালত। একই সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ যেন মামলা গ্রহণ না করে, সে বিষয়েও রায়ে বলা হয়।

বিচারকের এমন পর্যবেক্ষণের প্রতিবাদও জানায় বেশ কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিচারকের ওই বক্তব্য বেআইনি ও অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া বিচারকের ওই পর্যবেক্ষণ এখতিয়ারবহির্ভূত বলে জানিয়েছিলেন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এ ঘটনার পর বিচারক কামরুন্নাহারকে বিচারকাজ থেকে সাময়িক অব্যাহতির নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি। পরে তাকে আদালত থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতে চিঠি দেওয়া হয়।

রেইনট্রিতে ধর্ষণ: সাফাতসহ পাঁচ আসামি খালাস
কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্ট

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে দুই শিক্ষার্থীকে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ মে সাফাতসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় ধর্ষণ মামলা হয়।

তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

একই বছরের ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ওই বছরের ১৩ জুলাই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শফিউল আজম পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়। মামলার অন্য তিন আসামি সাদমান সাকিফ, আলী ও বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধেও একই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

২০২১ সালের ১১ নভেম্বর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ে পাঁচ আসামিকে খালাস দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার।

এ মামলার আসামিরা হলেন- আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিম।

এফএইচ/বিএ/এমএস

Read Entire Article