‘ব্যাটিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব’

2 days ago 1
‘ব্যাটিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব’

‘ব্যাটিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব’

খেলা

সেকান্দার আলী 2025-11-05

জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের নিয়োগ পেয়ে খুশি মোহাম্মদ আশরাফুল। যদিও তাঁর অতীত নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হচ্ছে। আশরাফুল সেগুলো দেখেও ইতিবাচক। গতকাল মঙ্গলবার সমকালকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘আমি ভুলের শাস্তি ভোগ করে ফেলেছি।’ কোচ হিসেবে এখন কিছু দিতে চান তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সেকান্দার আলী।

সমকাল: ব্যাটাররা এখন ভালো করতে পারছেন না। কিছুটা ‘ডাউন’ আছেন তারা। এই মুহূর্তে তাদের চাঙ্গা করবেন কীভাবে?
আশরাফুল:
গত কয়েক বছর ইংল্যান্ডে খেলে যে অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, সেই অভিজ্ঞতা মেলে ধরব। ইংল্যান্ডে গত দুই বছর ধারাবাহিক ছিলাম, ৭৬ গড়ে রান করেছি। এটা কীভাবে হয়েছে, আমি বুঝতে পেরেছি। নির্দিষ্ট দিনের পিচে কত রান সেভ, কত রান হলে জেতা যাবে, উইকেট দেখে তা বুঝতে পারলে এবং সে লক্ষ্যে ব্যাটিং করা গেলে ধারাবাহিক রান করা সম্ভব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে সৌম্য সরকার ৩০ ওভার পর্যন্ত খেলে ৪৬ রান করেছে। দলের রান ৩০ ওভারে ৯০ বা ১০০ হয়েছিল। ওই ক্যালকুলেশন ঠিক মতো করা সম্ভব হলে ভালো হবে। সৌম্য আরও ১৫ ওভার খেলতে পারলে ৩০ রান যোগ করা সম্ভব ছিল। শেষের পাঁচ ওভার মেরে খেলতে পারলে ১০০ হতো রান। জাতীয় লিগে ওর সঙ্গে এভাবে আলাপও করেছিলাম। ও বলছিল, ভাই আমি শতক মিস করেছি। এভাবে চিন্তা করা সম্ভব হলে ব্যাটাররা ধারাবাহিক হতে পারবে। 

সমকাল: আপনিও তো ২০ বা ২৫ করে আউট হয়ে বলতেন শুরুটা ভালো ছিল, দুঃখজনক আউট হয়ে গেছি। 
আশরাফুল:
আমি ২০ রান বা ২৫ রান করে আউট হতাম। ওই সময় আমি হয়তো চিন্তা করতাম– অতি আত্মবিশ্বাস ছিল নয়তো আগে থেকে শট নির্ধারণ করে খেলতাম। বলের মেধা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করিনি। ইংরেজিতে যেটাকে বলে ‘প্রি ডিটারমাইন শট সিলেকশন’। এ কারণেই আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড় ২০ বা ২৫ রান করে আউট হয়ে যায়। এগুলো নিয়েই খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলাপ করব। খেলোয়াড়রা বিষয়টি অনুধাবন করলে রান পাবে। 

সমকাল: জাতীয় দলে সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির হওয়ার সুযোগ দেখেন?
আশরাফুল:
কোনো সুযোগ নেই। সালাউদ্দিন ভাই দেশসেরা কোচ। আমি অধিনায়ক থাকার সময় তিনি কোচ ছিলেন। সালাউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে যখনই দেখা হয়, আমরা বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা বলি। আমার কারও সঙ্গে ঝামেলা নেই। 

সমকাল: আপনার সাবেক সতীর্থ রুবেল হোসেনের দুটি স্ট্যাটাস দেখেছেন, যেখানে প্রথমে লেখা হয়েছে বিসিবি দায়মুক্ত হলো। পরে লিখেছেন– ‘যে মাঠ একসময় বিশ্বাস হারিয়েছে, সেই মাঠেই আবার শিক্ষা দিতে আসা, জীবনটা আসলেই সিনেমা, সময় সত্যিই অদ্ভুত! যাদের এক সময় উদাহরণ হিসেবে বাদ দেওয়া হয়েছিল, আজ উদাহরণ দিতে এসেছে!’ এই মন্তব্য নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই। 
আশরাফুল:
আমি ঠিক জানি না ও (রুবেল হোসেন) কারে মিন করেছে। একেক জনের ব্যক্তিগত মতামত থাকতেই পারে। আমার জীবনে যা হয়েছে আমি প্রকাশ্যে শিকার করেছি। ওই পর্ব শেষ করে আমি এখানে।

সমকাল: বিভিন্ন জায়গায় লেখা হয়েছে– ফিক্সিংয়ের অপরাধে পাঁচ বছর নিষেধাজ্ঞায় থাকা ক্রিকেটার এখন জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে থাকবেন। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
আশরাফুল:
আমার কোনো মতামত নেই। কারণ এটার জন্য যা যা হওয়ার হয়েই গেছে। এমন না যে দুনিয়াতে শুধু আমি একাই এসব করে শাস্তি পেয়েছি। এটা ঠিক দুনিয়াতে আমি প্রথম ব্যক্তি যে কিনা নিজে স্বীকার করেছি ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি। বিশ্বে আর কেউ স্বীকার করেনি। 

সমকাল: আপনার কোচিং অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আপনারই একজন সাবেক সহখেলোয়াড়। 
আশরাফুল:
আপনি বিশ্বব্যাপী দেখবেন খেলা ছাড়ার পর পর অনেকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হয়। সাউদি এখনও খেলে, কিন্তু কোচিং করায়। ইংল্যান্ড দলের বোলিং নিয়ে কাজ করছে সে। বিশ্বে এ রকম অনেক নজির আছে। আমি তো লেভেলে থ্রি কোচিং কোর্স তিন বছর আগে করেছি। গ্লোবাল টি২০ টুর্নামেন্টে দুবার কোচ ছিলাম। একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার্সআপ হওয়া দলের কোচ ছিলাম। যারা ভাবে অভিজ্ঞতা নেই, তারা ভাবতেই পারে। আমি এই খেলায় শুরু থেকে, আমার মনে হয় না কোনো জায়গায় অভিজ্ঞতার কমতি আছে। 

সমকাল: বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে আপনার গভীর সম্পর্ক আছে আগে থেকেই। এটা কি আপনার বড় সাপোর্ট? 
আশরাফুল:
এটা তো অবশ্যই। বুলবুল ভাই আমার রোল মডেল। আমার লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স করার পেছনে ওনার অবদান আছে। ওই সময়ে আবুধাবিতে কোর্সে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। কোনো সন্দেহ নেই এটা আমার জন্য আর্শীবাদ।

© Samakal
Read Entire Article