মাগুরায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন, বেড়েছে সরবরাহ

6 hours ago 7

মাগুরায় অনুকূল আবহাওয়ার কারণে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজির সরবরাহ। বাজারে সবজির দাম কিছুটা চড়া, যা শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এ মৌসুমে মাগুরায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক এবং কৃষি কর্মকর্তারা।

কম পরিশ্রম ও স্বল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় মাগুরায় মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ পদ্ধতিতে টমেটো, বেগুন, মরিচ, শসা, করলাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে কৃষকেরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। কিছু কিছু জায়গায় কৃষকদের মাঝে শীতকালীন সবজি বীজ বিতরণ করা হয়েছে, যা আগামী মৌসুমে সবজি উৎপাদনে সহায়তা করবে।

প্রাথমিক ফসল কাটা শুরু হওয়ায় অঞ্চলজুড়ে স্থানীয় বাজারগুলো এখন তাজা শীতকালীন সবজিতে ভরে উঠেছে। যা কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ভালো দাম পাচ্ছেন।

কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনুকূল জলবায়ু, উন্নতমানের বীজ, সার এবং কৃষি উপকরণ সরবরাহ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে চমৎকার ফলন সম্ভব হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩১০ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর, শালিখা উপজেলায় ২৬০ হেক্টর এবং মহম্মদপুর উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চাষকৃত জমি থেকে কৃষকেরা মোট ২২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন করবেন বলে আশা করেন।

আরও পড়ুন
সোনারগাঁয়ে পেঁপে চাষে কৃষকের মুখে হাসি
লতিকচু চাষে আলোর মুখ দেখছেন রফিকুল

সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত এবং নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি কমে যাওয়ার পরপরই অনেক কৃষক আগাম শীতকালীন সবজি রোপণ শুরু করেন। অনেকে সেপ্টেম্বরের শেষদিকে জেলাজুড়ে স্বল্পমেয়াদী আমন ধান কাটার পর আগাম জাতের সবজি চাষ শুরু করেন। বেশিরভাগ কৃষক আশাবাদী, স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে তাজা সবজির চাহিদা বেশি থাকায় বর্তমান ফসলে তারা বেশি লাভবান হবেন।

মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার হাজরাতলা গ্রামের কৃষক সুশেন বালা বলেন, ‘কৃষি বিভাগের সহায়তায় ১ একর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। আশা করছি চলতি মৌসুমে চাষকৃত জমি থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা উপার্জন করবো।’

শ্রীপুর উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের কৃষক আবিদ মিয়া বলেন, ‘চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলনের আশা করছি। স্থানীয় বাজারগুলোতে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, লাউ, বেগুন, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজিতে বাজার ভরে উঠেছে। কিছুদিন গেলেই ঠান্ডা পড়বে। বাজারে অনেক সবজি উঠবে। তখন সবজির দাম অনেকটাই কমে যাবে।’

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। এ মৌসুমে ১ হাজার ৬৮০ জন খামারিকে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের সবজি উৎপাদন কেবল স্থানীয় চাহিদাই পূরণ করে না বরং ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ প্রধান পাইকারি বাজারগুলোতেও সরবরাহ করা হয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগ কৃষকদের ফলন ও লাভ বৃদ্ধির জন্য সার, বীজ এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে চলেছে। ভালো ফসল এবং ন্যায্য মূল্য প্রতি বছর কৃষকদের সবজি চাষ সম্প্রসারণে উৎসাহিত করছে। বন্যা বা সংকটের সময় মাগুরার উৎপাদিত পণ্য প্রায়ই দেশের সবজি সরবরাহ স্থিতিশীল করতে সাহায্য করেছে।’

মো. মিনারুল ইসলাম জুয়েল/এসইউ/এএসএম

Read Entire Article