চব্বিশের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় আন্দোলন চলাকালে বাসার গেটের ভেতরে থাকা অবস্থায় পুলিশের ছোঁড়া গুলি লাগে মুসার মাথায়। গুলি ওর মাথার একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে আমার মায়ের (মুসার দাদি) পেটে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান, তবে অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় মুসা।— এমনটি বলছিলেন মুসার বাবা মোস্তাফিজুর রহমান।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে জবানবন্দিতে এ কথা বলেন মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই দিন গুলিতে মুসার মাথার খুলির একপাশ উড়ে যায়। পরে সেখানে কৃত্রিম খুলি বসানো হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে শরীরের ডান পাশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। সবকিছু বুঝতে পারে মুসা, কিন্তু কথা বলতে বা স্বাভাবিকভাবে খেতে পারে না— এখন সে একপ্রকার বোবা শিশুর মতো।
এদিন সাক্ষ্য ও জেরা শেষে সাংবাদিকদের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছয় বছর বয়সী আমার ছোট্ট ছেলে মুসার স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়া। তাকে ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি করেছিলাম। সব সময় বলতো, আমি পাইলট হবো। কিন্তু এক মুহূর্তেই সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেলো।
মুসার বাবা বলেন, আইসক্রিম খাওয়ার বায়না ধরেছিল মুসা। তাই আমার মায়ের (মুসার দাদি) সঙ্গে আইসক্রিম কিনতে দোকানে যায় মুসা।আইসক্রিম নিয়ে বাসার গেট পার হওয়ার সময় হঠাৎ পুলিশের গুলি মুসার মাথায় লাগে। গুলি ডান দিক দিয়ে ঢুকে বাম দিক দিয়ে বের হয়ে মায়ের পেটে লাগে। পরে তিনি মারা যান। তবে অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় শিশু মুসা।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তার ফেসবুক পেজে শিশু মুসার সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রামপুরায় নিজ বাসা থেকে বাবা ও দাদির সঙ্গে আইসক্রিম কিনতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় মুসা। ঘাতকের বুলেট মাথার একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে দাদির পেটে লাগে। দাদি শহীদ হন, কিন্তু অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় মুসা।
তিনি লিখেছেন, আমাদের জুলাই অজস্র বীরত্বগাঁথা ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত। এ ত্যাগ ও কোরবানি বৃথা যেতে দেবে না এ জাতি, ইনশাআল্লাহ।
এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস

1 week ago
14









English (US) ·