রওজা ও মাজার শব্দের অর্থ কী?

11 hours ago 5

 

রওজা অর্থ বাগান, মাজার অর্থ জিয়ারতের স্থান, রওজা মুবারক অর্থ বরকতময় বাগান, রওজায়ে মুতাহহারাহ অর্থ পবিত্র বাগান। আমাদের দেশে সাধারণত পীর, দরবেশদের দাফনস্থলকে সম্মান দেখিয়ে মাজার বলা হয়, নবীজির (সা.) দাফনস্থলকে রওজা, রওজা মুবারক বা রওজায়ে মুতাহারাহ বলা হয়।

কবরকে মাজার বলা যায়?

ইসলামে নবীজি (সা.), সাহাবায়ে কেরাম, ওলি, দরবেশসহ যে কোনো নেককার বা মুমিন ব্যক্তির কবরকে মাজার বলার অনুমতি রয়েছে। কারণ মুমিনের কবরমাত্রই জিয়ারতের স্থান। আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজে মুমিনদের কবর জিয়ারত করতেন এবং সাহাবিদেরও কবর জিয়ারত করতে উৎসাহ দিয়েছেন।

রাসুল (সা.) বলেন, কবর জিয়ারত করুন, কারণ কবর জিয়ারত দুনিয়ার আকর্ষণ কমিয়ে দেয় ও পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনানে ইবনে মাজা: ১৫৭১)

সুতরাং যে কোনো মুসলমানের কবরই অন্যান্য মুসলমানদের জন্য মাজার বা জিয়ারতের স্থান।

কাদের কবরকে রওজা বলা যায়?

রওজা শব্দের অর্থ বাগান যেমন ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে। মাজারের মত রওজা শব্দটিও নবীজি (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামসহ যে কোনো নেককার মুমিন ব্যক্তির কবরের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।

নবীজি (সা.) বলেছেন, কবর জান্নাতের বাগানসমূহের মধ্যে একটি বাগান অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের মধ্যে একটি গর্ত। (সুনানে তিরমিজি: ২৪৬০)

নবীজি (সা.) যেহেতু জান্নাতি, নেককার মুমিনদের ব্যাপারেও আশা করা যায় তারা জান্নাতি হবেন, তাই নবীজি (সা.) ও অন্যান্য নেককার মুমিনদের কবরকেও সম্মান করে সুধারণার ভিত্তিতে রওজা বলা যায়।

নবী (সা.) ও পীর-দরবেশদের দাফনস্থলকে কবর বলা নিষিদ্ধ?

আমাদের দেশে অনেকের ধারণা হলো, নবী (সা.) ও পীর-দরবেশদের কবরকে কবর বলা যাবে না, রওজা বা মাজারই বলতে হবে, কবর বললে তাদের সঙ্গে বেয়াদবি হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। নবী (সা.) বা বুজুর্গদের করবকে কবর বলা যাবে না এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা ইসলামে নেই।

হাদিসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবী-রাসুলগণের দাফনস্থলকেও কবরই বলা হয়েছে। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ইহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লানত, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে সিজদার স্থান বানিয়েছে। (সহিহ বুখারি: ৪৩৫) অন্য এক হাদিসে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নিজের কবরকেও কবর বলেন। নবীজি (সা.) বলেন, আমার কবরকে আপনারা উৎসবের স্থান বানাবেন না। (সুনানে আবু দাউদ: ২০৪২)

এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায় নবীগণসহ সম্মানিত ব্যক্তিদের কবরকে কবর বলা নিন্দনীয় নয়, বেয়াদবি নয়। সাহাবায়ে কেরামও নবীজির (সা.) কবরকে ব্যাপকভাবে কবরই বলতেন।

ওএফএফ

Read Entire Article