২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয় উদ্বেগজনকভাবে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম।
তবে, তৈরি পোশাক খাতের (আরএমজি) ওপর ভর করে দেশের রপ্তানি আয় ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বছরে মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে ১৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সোমবার (৩ নভেম্বর) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আগের অর্থবছর ২০২৪–২৫ সালের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ১৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানিকারকরা জানান, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস ছিল রপ্তানির জন্য দুর্বল মৌসুম। এই সময়ে ক্রেতাদের অর্ডার কমে যায় এবং ইউডি আবেদনও কমে আসে, ফলে রপ্তানি আয়েও প্রভাব পড়ে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পারস্পরিক শুল্কের কারণে সেদেশে রপ্তানি অর্ডার কমে গেছে এবং ইউরোপীয় বাজারে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে গেছে।
এর আগে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসেও রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের খাত আরএমজি খাতে আয় হয়েছে ১২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ১২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে একক মাস হিসেবে এ খাতে আয় হয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইপিবির তথ্যে।
আরএমজি খাতের দুই উপখাত—ওভেন ও নিটওয়্যার অক্টোবরে যথাক্রমে ১০ শতাংশের বেশি ও ৫ শতাংশের বেশি রপ্তানি আয়ে পতনের সম্মুখীন হয়েছে।
তবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে নিটওয়্যার রপ্তানি সামান্য ০ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আর বোনা পোশাকের রপ্তানি ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে ৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
অন্য উল্লেখযোগ্য খাতের মধ্যে হোম টেক্সটাইল পণ্য খাতের রপ্তানি ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে ২৭৯ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ২৫৫ মিলিয়ন ডলার ছিল।
কৃষিপণ্য খাতে রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৭২ শতাংশ কমে ৩৭৯ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের ৩৮৫ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় কম।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ, যা দাঁড়িয়েছে ৪১৪ মিলিয়ন ডলারে; আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ৩৭২ মিলিয়ন ডলার।
ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য খাতে রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ, আয় দাঁড়িয়েছে ২২০ মিলিয়ন ডলারে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৬৩ মিলিয়ন ডলার।
পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ, যা দাঁড়িয়েছে ২৭৭ মিলিয়ন ডলারে; আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ২৬৫ মিলিয়ন ডলার। যদিও দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, তবে ইপিবির তথ্যানুযায়ী, অক্টোবর মাসে অধিকাংশ পণ্যের রপ্তানি আয়ে পতন ঘটেছে।
তাছাড়া, বছরওয়ারি পতন সত্ত্বেও ধারাবাহিক মাসিক প্রবৃদ্ধি ও প্রধান খাতগুলোর ইতিবাচক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পের স্থিতিস্থাপকতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা প্রমাণ করছে বলে জানিয়েছে ইপিবি।
আইএইচও/এএসএ/এএসএম

1 day ago
6









English (US) ·