শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে পালালেন প্রধান শিক্ষক
সারাদেশ
নওগাঁ প্রতিনিধি 2025-11-05প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ-সংক্রান্ত ভিডিও ভাইরাল হলে বিদ্যালয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁকে ধাওয়া দেয়। ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে এক সহকারী শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক শামীমকে বরখাস্ত করে। পরবর্তীকালে রেজাউল করিম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান।
বুধবার সকালে শাহাদাত হোসেন শামীম গ্রামের কিছু লোক নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসে এর প্রতিবাদ জানায়। তারা শাহাদাত হোসেন শামীমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে শাহাদাত হোসেন শামীম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আদালতে মামলা করলে আমার পক্ষে রায় দেন বিচারক। বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কাগজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক লোকজন নিয়ে জোর করে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাও চালায়। সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বিদ্যালয়ে ফিরতে দেব না।’ আদালতের রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের রায়ের যে কপি দেখানো হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে সন্দেহ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাই তারা বিক্ষোভ করেছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এক অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের আদর্শ। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ মানা যায় না। এত বড় ঘটনার পর তিনি কীভাবে বিদ্যালয়ে আসেন? আমরা তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, ‘বর্তমানে ছুটিতে আছি। আদালতের রায়ের কোনো চিঠি এসেছে কিনা বলতে পারব না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘ট্রেনিং থেকে ফিরে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
থানার ওসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আদালতের রায়ের কপি প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
© Samakal
14 hours ago
2









English (US) ·