‘স্বাধীনতাবিরোধী ও রাজাকার’ ট্যাবলেট মানুষ আর খায় না : এটিএম আজহার

3 days ago 8

জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে স্বাধীনতাবিরোধী এবং রাজাকার বলে প্রচারণা এখন আর জনগণ বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াত আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয় রাজাকার, একাত্তর সালের স্বাধীনতাবিরোধী; তাহলে তাদের কল্পিত রাজাকারকে ছাত্ররা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করল? এ ট্যাবলেট আর মানুষ খায় না। মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে আমাদের দমানোর চেষ্টা করা হয়েছে তাই ছাত্রদের মধ্যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’

এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির যখন গঠিত হয় তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম সভাপতি আমি ছিলাম। সে সময় আমরা প্রকাশ্যে কাজ করতে পারতাম না, গোপনে নামাজ পড়তে হতো। কিন্তু জুলাই পরবর্তী সময়ে শিবির যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার সুযোগ পেল তারপর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজ পড়ার কারণে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। সেখানে ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে শিবির জিতেছে। পরে চাকসু ও রাকসুতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিজয় লাভ করেছে শিবির।’

মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের বয়ান অনুযায়ী একাত্তরে ১২০০ লোককে নাকি আমি হত্যা করেছি। একজন মহিলাকে হত্যার জন্য দায়ী করে আমাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হলো। মামলার শুনানির সময় আইনজীবীরা সাক্ষীদের জিজ্ঞেস করতে তারা বলেছে, কেউ তিন বা ছয় কিলোমিটার দূর থেকে দেখেছে, মাঝখানে আবার বাড়িঘর ছিল। মিথ্যা অপবাদে আমাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাদের আগের নেতাদের এরকমভাবেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমার মুক্তির পথ সুগম হয়। আমি কারও দয়ার মাধ্যমে মুক্তি পাইনি। সুপ্রিম কোর্টে আমার মামলায় পুনঃশুনানির জন্য আবেদন করেছিলাম। সেখানে সাতজন বিচারপতি একমত হয়ে আমাকে মুক্তি দেন এবং তারা লিখে দেন এটা বিচারের নামে প্রহসন।’

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে জামায়াতের শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘আমার অপরাধ হলো আপনাদের পাশে থেকেছি, জনগণ ও তাদের মুক্তির জন্য কাজ করেছি। আর এ দেশ থেকে ভারতীয় আধিপত্য থেকে বাঁচাতে ও একজন মুসলিম হিসেবে আল্লাহর আইন কায়েম করার চেষ্টা করেছি। এ অপরাধে আমাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়ে গেল।’

লোহানীপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি অনাবিল লোহানী জাদুর সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির শাহ মুহাম্মদ রোস্তম আলী, সেক্রেটারি মেনহাজুল ইসলাম, বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা আশরাফ উদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

Read Entire Article