বাংলার প্রতিটি রান্নাঘরে আলু যেন অবিচ্ছেদ্য একটি সবজি। ভর্তা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলুর দম, সবজির ঝোল কিংবা পরোটা প্রায় সব খাবারেই এর ব্যবহার দেখা যায়। সহজলভ্য ও পুষ্টিকর বলে অনেকেই একসঙ্গে বেশি পরিমাণে আলু কিনে ঘরে মজুত রাখেন।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে দেখা যায়, আলুর গায়ে ছোট ছোট অঙ্কুর গজাতে শুরু করে। তখন প্রশ্ন ওঠে এই অঙ্কুরিত আলু খাওয়া কি নিরাপদ? চলুন, জেনে নেওয়া যাক অঙ্কুরিত আলু খাওয়া উচিত কি না এবং এতে কী ধরনের ঝুঁকি লুকিয়ে আছে-

হেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অঙ্কুরিত আলুতে দুটি রাসায়নিক যৌগ থাকে ‘সোলানিন ও চ্যাকোনিন’। অল্প পরিমাণে এই যৌগ শরীরে রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সহায়তা করতে পারে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করলে এটি শরীরের জন্য বিষে পরিণত হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সামান্য পরিমাণ গ্লাইকোঅ্যালকালয়েডও শরীরে প্রবেশ করলে বমি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর অতিরিক্ত গ্রহণ করলে মাথাব্যথা, জ্বর, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ হ্রাসসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়।
কেন অঙ্কুরিত আলু খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত?
- আলুর পাতা, ফুল, চোখ এবং অঙ্কুরে গ্লাইকোঅ্যালকালয়েডের ঘনত্ব থাকে, যা মানুষের জন্য বিষাক্ত। এই যৌগ হজম ও স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বমি, মাথা ঘোরা, পেট ফাঁপা বা বমি বমি ভাব এগুলোরই লক্ষণ।
- অঙ্কুরিত আলুতে বিষাক্ত যৌগের মাত্রা বেড়ে গেলে এর স্বাদও তিক্ত হয়ে যায়। ফলে খেতে যেমন অরুচিকর লাগে, তেমনি শরীরেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
- আলু অঙ্কুরিত হওয়ার সময় এতে জমে থাকা পুষ্টিগুণ ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। তাই এ সময়ের আলু আগের মতো পুষ্টিকর থাকে না।
অঙ্কুরিত আলু খাওয়ার ঝুঁকি কমানোর উপায়
অঙ্কুর কেটে ফেলা বা আলুর চোখ ও সবুজ অংশ ফেলে দিলে বিষাক্ততা কিছুটা কমানো যায়, তবে পুরোপুরি নয়। ভাজা বা ডিপ-ফ্রাই করলে গ্লাইকোঅ্যালকালয়েডের মাত্রা সামান্য কমে, কিন্তু ফুটানো, বেকিং বা মাইক্রোওয়েভে গরম করলে এর বিষাক্ততা তেমন হ্রাস পায় না।

নিরাপদ বিকল্প কী হতে পারে?
যে আলু অঙ্কুরিত হয়েছে বা সবুজ হয়ে গেছে, তা না খাওয়াই নিরাপদ। চাইলে একবারে অল্প পরিমাণে আলু কিনুন, যা এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে খেয়ে ফেলা যায়। সংরক্ষণের সময় ঠান্ডা, অন্ধকার ও শুকনো জায়গা বেছে নিন। এতে অঙ্কুরোদগমের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
সর্বোপরি স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে অঙ্কুরিত আলু থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। নতুন ও তাজা আলুই হোক আপনার প্রতিদিনের রান্নার সঙ্গী।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন
জেএস/

2 hours ago
5








English (US) ·