বার্ধক্য, বৃদ্ধাবস্থা, বৃদ্ধ বয়স বা জরা মানব জীবনের শেষ ধাপ। মানুষের জীবনের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনকাল পার করে বার্ধক্য আসে। যৌবনের সৌন্দর্য ও শক্তিমত্তা হারিয়ে দুর্বল, ভঙ্গুর, জরা ও রোগগ্রস্ত হয়ে পড়াকেই বার্ধক্য ধরা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
اَللّٰهُ الَّذِیۡ خَلَقَكُمۡ مِّنۡ ضُؔعۡفٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنۡۢ بَعۡدِ ضُؔعۡفٍ قُوَّۃً ثُمَّ جَعَلَ مِنۡۢ بَعۡدِ قُوَّۃٍ ضُؔعۡفًا وَّ شَیۡبَۃً یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ ۚوَ هُوَ الۡعَلِیۡمُ الۡقَدِیۡرُ
তিনি আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে দুর্বল অবস্থায় সৃষ্টি করেছেন, দুর্বলতার পর দিয়েছেন শক্তি, শক্তির পর আবার দিয়েছেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছে করেন সৃষ্টি করেন। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, সবচেয়ে শক্তিধর। (সুরা রূম: ৫৪)
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ اللّٰهُ خَلَقَكُمۡ ثُمَّ یَتَوَفّٰىكُمۡ وَ مِنۡكُمۡ مَّنۡ یُّرَدُّ اِلٰۤی اَرۡذَلِ الۡعُمُرِ لِكَیۡ لَا یَعۡلَمَ بَعۡدَ عِلۡمٍ شَیۡئًا اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌ قَدِیۡرٌ
আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে উপনীত করা হয় জরাজীর্ণ বয়সে। ফলে তারা যা কিছু জানত সে সম্বন্ধে তারা সজ্ঞান থাকেনা; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। (সুরা নাহল: ৭০)
নবিজি (সা.) শেষ বয়সের জরা বা বার্ধক্য থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجْزِ وَالكَسَلِ وَالجُبْنِ وَإِلٰهَرَمِ وَالبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ المَحْيَا وَالمَمَاتِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজুবিকা মিনাল আজযি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুবনি ওয়াল হারামি ওয়াল বুখলি ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহয়া ওয়াল মামাতি
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চই আমি তোমার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, স্থবিরতা ও কৃপণতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আজাব থেকে, আশ্রয় কামনা করছি জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে (সহিহ বুখারি: ২৮২৩, সহিহ মুসলিম ৭০৪৮)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ، وَالْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ النَّارِ وَعَذَابِ النَّارِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْغِنَى، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْفَقْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ عَنِّي خَطَايَاىَ بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالْبَرَدِ، وَنَقِّ قَلْبِي مِنَ الْخَطَايَا، كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ، وَبَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কাসলি ওয়াল হারামি, ওয়াল মা’সামি ওয়াল মাগরামি, ওয়া মিন ফিতনাতিল কবরি ওয়া আজাবিল কবরি, ওয়া মিন ফিতনাতিন নারি ওয়া আজাবিন নারি, ওয়া মিন শাররি ফিতনাতিল গিনা, ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল ফাকরি, ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ-দাজ্জাল, আল্লাহুম্মাগসিল আন্নি খাতায়ায়া বিমায়িস সালজি ওয়াল বারাদি, ওয়া নাক্কি কালবি মিনাল খাতায়া কামা নাক্কাইতাস সাওবাল আবয়াদা মিনাদ দানাসি, ওয়া বাইদ বাইনি ওয়া বাইনা খাতায়ায়া কামা বাআদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি অলসতা, অতিশয় বার্ধক্য, গুনাহ আর ঋণ থেকে, কবরের ফিতনা এবং কবরের শাস্তি থেকে, জাহান্নামের ফিতনা এবং এর শাস্তি থেকে, ধনশালী হবার পরীক্ষার খারাপ পরিণতি থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাচ্ছি দারিদ্রের অভিশাপ থেকে, আমি আরও আশ্রয় চাচ্ছি মসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে। হে আল্লাহ! আমার গুনাহের দাগগুলো থেকে আমার অন্তরকে বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিন এবং আমার অন্তরকে সমস্ত গুনাহের ময়লা থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করে দিন, যেভাবে আপনি শুভ্র বস্ত্রকে ময়লা থেকে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে থাকেন। আমার ও আমার গুনাহগুলোর মধ্যে এতটা দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন, যতটা দূরত্ব আপনি দুনিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম দিকের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন। (সহিহ বুখারি: ৬৩৬৮)
বার্ধক্য ও অন্যান্য অকল্যাণ থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে এ দুটি দোয়া আমরাও পড়তে পারি।
ওএফএফ/এএসএম

                        5 months ago
                        74
                    








                        English (US)  ·