দীর্ঘ ১১ মাস ধরে প্রধান প্রকৌশলী ছাড়াই চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রকৌশল দপ্তর। এতে ব্যাহত হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটির কার্যক্রম। প্রধান প্রকৌশলী না থাকায় প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ সাময়িক দায়িত্বপালন করছেন।
পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের মতো জরুরি সেবা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও নতুন স্থাপনা নির্মাণ কাজ পরিচালনা করে থাকে এই অফিস। স্থায়ী প্রধান প্রকৌশলী না থাকায় কোনোরকম চললেও কাঙ্ক্ষিত কাজ হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
তথ্য মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সালাম মোহাম্মদ শরীফ গত বছরের ১৩ নভেম্বর অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যান। এর পরবর্তীতে প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদকে সাময়িক দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পার হলেও নতুন করে কোনো প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
প্রকৌশলবিষয়ক সব কাজে পরিচালিত এই প্রকৌশল অফিসে মাত্র ৮ জন প্রকৌশলী নিয়োজিত ছিলেন।যার মধ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত ও একজন স্বয়ং প্রকল্প অফিসে নিয়োজিত।
এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সালাম মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘গত বছর থেকে আমি পিআরএলে আছি। সেই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোনো প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রধান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছাড়া প্রকৌশল দপ্তরের কার্যক্রম চলা সম্ভব নয়। একজন প্রকৌশলী ব্যতীত প্রকৌশল বিষয়ক সব কাজের সিদ্ধান্ত (সিগনেচার) নেওয়া হচ্ছে। যা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও দীর্ঘদিন ধরে গ্রহণযোগ্য নয়।’

এ বিষয়ে জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু বলেন,‘দীর্ঘদিন ধরে প্রধান প্রকৌশলী ছাড়া প্রকৌশল দপ্তর চলছে। যা কখনোই কাম্য নয়। সাময়িক সময়ের জন্য প্রশাসন রুটিন দায়িত্বে অন্য কাউকে দিতে পারে। তবে ১ বছরের মতো কোনো প্রকৌশলী প্রধান ছাড়া প্রকৌশল দপ্তর চলতে পারে না। প্রকৌশল দপ্তরের আওতাধীন এখন অনেকগুলো কাজ চলমান। এসব কাজ তদারকি জন্য প্রধান প্রকৌশলী অবশ্যই দরকার।’
নগর ও অঞ্চল পরিচালনা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আকতার মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিটি কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য একজন প্রধান ও দক্ষ কাউকে প্রয়োজন। তা না হলে কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যায় না। আমাদের অনেকগুলো প্রকৌশল বিষয়ক কাজ চলমান। সেগুলো যথারীতি আঞ্জাম দেওয়ার জন্য একজন প্রকৌশলী প্রধান অবশ্যই প্রয়োজন। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) তার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও একজন প্রকৌশলী প্রধান ছাড়া প্রকৌশল দপ্তর কখনোই চলতে পারে না।’
সাময়িকভাবে প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমার ওপর অর্পিত অতিরিক্ত দায়িত্ব আমি যথাসাধ্য পালন করার চেষ্টা করি। প্রকৌশল বিষয়ে একজন প্রকৌশলী প্রধান অবশ্যই দরকার। তবে প্রকৌশলী প্রধান না থাকলেও অন্য প্রকৌশলদের সমন্বয়ে সব কাজ করা হচ্ছে।’
জানা যায়, বর্তমানে ১৭ জন কর্মকর্তা ও ৯৫ জন কর্মচারীর (দৈনিক হাজিরাসহ) সমন্বয়ে জাবি প্রকৌশল দপ্তর সব ধরনের প্রশাসনিক ও সেবাকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। দপ্তরের সব কার্যক্রম ৮টি শাখার মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। মূল সাধারণ শাখা ছাড়াও অন্যান্য শাখাগুলো হলো- প্রকৌশল শাখা, কাঠ-গ্যাস ও হার্ডওয়্যার শাখা, স্যানেটারি শাখা, ওয়েল্ডিং ও রাজমিস্ত্রি শাখা, বৈদ্যুতিক শাখা, পাম্প শাখা ও টেন্ডার শাখা।
মো. রকিব হাসান প্রান্ত/এমএন/জেআইএম

1 day ago
3









English (US) ·