দীর্ঘদিন পর দেশের শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংক কোম্পানিগুলো। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বেশিরভাগ মিউচুয়া ফান্ড। ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখালেও সার্বিক শেয়ারবাজারে দরপতনের পাল্লা ভারী হয়েছে। ফলে দু’দিন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর শেয়ারবাজারে ফের দরপতন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত তিন সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে ১২ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতিও। ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া লেনদেন সোমবার ৫০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে আসে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতি বাড়ায় লোকসান কমে আসার স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু দুই কার্যদিবসের সাময়িক ঊর্ধ্বমুখিতার পর শেয়ারবাজারে আবার দরপতনের পাল্লা ভারী হয়।
টানা দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টা সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকে।
কিন্তু শেষ ঘণ্টার লেনদেনে হঠাৎ এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। অবশ্য এই পতনের মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বেশিরভাগ ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ড।
দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১১৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৩টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৪১টির দাম কমেছে। আর ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৪টির দাম কমেছে এবং ১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যদিকে ২৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৭টির এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সার্বিকভাবে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৩৩ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। অবশ্য লেনদেন ৫০০ কোটি টকার বেশি হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৪৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৮৪ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ২২ টাকার। ২০ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিটি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, উত্তরা ব্যাংক, কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ এবং ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/এএসএম

 5 months ago
                        37
                        5 months ago
                        37
                    








 English (US)  ·
                        English (US)  ·