লিবিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের অপহরণ করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় খন্দকার রিফাত হোসেন (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে তাকে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সূত্রাপুর থানার বেগমগঞ্জ লেন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই সূত্র জানায়, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ২০২৪ সালের ৭ মার্চ লক্ষ্মীপুর জেলা আদালতে মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গ্রেফতার রিফাত টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার খন্দকার রমজানের ছেলে। লিবিয়াতে তিনি একটি চক্রের হয়ে কাজ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে লিটন হোসেন ওরফে সুমন লিবিয়াতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য তিনি ৭২ হাজার দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫ লাখ টাকা) জমা করেন। খন্দকার রিফাত ও আরেকজন লিবিয়া প্রবাসীর সঙ্গে লিটনের পরিচয় হয়। লিটনের কাছে দিনার থাকার বিষয়টি জানতে পারেন রিফাত। পরে লিবিয়া ও পাকিস্তানি চক্রের সহায়তায় লিটনকে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারিতে অপহরণ করেন রিফাত। সেখানে তাকে আটকে নির্যাতন করে ৭২ হাজার দিনার নিয়ে যান। তাকে নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও চিত্র তার পরিবারের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। এসময় বাংলাদেশি একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন।
জানা যায়, এ ঘটনা নিয়ে গত বছরের ৭ মার্চ লক্ষ্মীপুর আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী লিটনের মামা মো. আনোয়ার হোসেন। মামলায় লিবিয়ায় থাকা রিফাতের শাশুড়ি ঢাকার সুত্রাপুরের বাসিন্দা আনু আক্তার ও তাদের আত্মীয় দিদার হোসেনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে অপহরণের ২ মাস ২০ দিন পর অপহরণকারীরা লিটনকে ছেড়ে দেয়।
নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন কার্যালয়ের (পিবিআই) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঘটনার মূলহোতা খন্দকার রিফাত গত ১৩ মে বাংলাদেশে এসে পলাতক থাকেন। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে আটক করা হয়। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। পরে তাকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রিফাত মাফিয়া চক্রের বাংলাদেশি মূলহোতা। একটি কফিশপে চাকরি করায় ওই চক্রের সঙ্গে সখ্যতা হয়। এরপর থেকে তিনি বাঙালিদের অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় করতেন।
কাজল কায়েস/এমএন/এমএস

4 hours ago
7









English (US) ·