হালদা নদীকে মৎস্য হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে রুইজাতীয় মাছের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতকরণ ও গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল সংরক্ষণের লক্ষ্যে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খাগড়াছড়ির রামগড় ও মানিকছড়ি এবং চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারী ও পাঁচলাইশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী এবং তীরবর্তী ২৩ হাজার ৪২২ দশমিক ২৮ একর জায়গা ‘হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
এপ্রিল-জুন মাসে হালদা নদীর বিভিন্ন স্থানে রুইজাতীয় মাছের প্রজননের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিষিক্ত ডিম পাওয়া যায়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, গেজেট প্রকাশের দিন থেকে কয়েকটি শর্ত কার্যকর হবে। যার মধ্যে রয়েছে- এ নদী থেকে কোনো প্রকার মাছ ও জলজ প্রাণী ধরা বা শিকার করা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করা যাবে। প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী কোনো প্রকার কার্যকলাপ করা যাবে না। ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকারক কোনো প্রকার কাজ করা যাবে না।
এছাড়া নদীর চারপাশের বসতবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পয়ঃপ্রণালী সৃষ্ট বর্জ্য ও তরল বর্জ্য নদীতে নির্গমন করা যাবে না। কোনো অবস্থাতেই নদীর বাঁক কেটে সোজা করা যাবে না। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ১৭টি খালে প্রজনন মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই) মৎস্য আহরণ করা যাবে না। নদী এবং সংযোগ খালের ওপর নতুন করে কোনো রাবার এবং কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করা যাবে না। হালদা নদী মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটির অনুমতি ব্যতীত নদীতে নতুন পানি শোধনাগার ও সেচ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা যাবে না।
আরও শর্ত রয়েছে- পানি ও মৎস্যসহ জলজ প্রাণীর গবেষণার ক্ষেত্রে তদারকি কমিটির অনুমতি ব্যতীত কোনো দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি হালদা ব্যবহার করে কোনো গবেষণা কাজ করতে পারবে না। মাছের প্রাক-প্রজনন পরিভ্রমণ সচল রাখার স্বার্থে নদী এবং সংযোগ খালের পানির প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। সারা বছর নদীর কর্ণফুলী মোহনা থেকে নাজিরহাট সেতু (অভয়াশ্রম এলাকা) পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত ভারী নৌযান (বালুবাহী ও পণ্যবাহী নৌকা ও ড্রেজার) চলাচল করতে পারবে না।
পাশাপাশি হালদা এবং তার শাখা নদীর বালুমহাল ইজারা বন্ধ করা এবং ড্রেজার দিয়ে বা ক্ষতিকর পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা যাবে না। নদীর অববাহিকা অঞ্চলে কোনো প্রকার তামাক চাষ করা যাবে না। অববাহিকা অঞ্চলে কৃষি জমিতে ক্ষতিকর কোনো কীট বা বালাইনাশক ব্যবহার করা যাবে না। নদীর পাড়সংলগ্ন এলাকায় কোনো প্রকার ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না।
উন্নততর পরিবেশগত ও প্রতিবেশগত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে এলাকার সীমা-পরিসীমা নির্ধারণসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সময়ে সময়ে বিধি-নিষেধ আরোপসহ প্রজ্ঞাপনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবে।
এনএইচ/একিউএফ

5 days ago
10









English (US) ·