ছেলে বা মেয়ে শিশুর জন্মের পর আকিকা করা সুন্নত। রাসুল (সা.) বলেছেন, সব শিশু তার আকিকার সাথে দায়বদ্ধ অবস্থায় থাকে। জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে জবাই করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাথা মুণ্ডন করে দিতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ১৫২২) রাসুল (সা.) একটি ছাগল জবাই করে তার নাতি হাসানের (রা.) আকিকা করেছিলেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৬০২)
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ও কন্যাসন্তানের জন্য একটি পশু আকিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি) হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইহুদিরা পুত্রসন্তানের আকিকা করত কিন্তু কন্যাসন্তানের আকিকা করত না। তোমরা পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে হলেও আকিকা করো। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি: ১৯৭৬০)
আকিকার দিন যেভাবে হিসাব করবেন
শিশু জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিন আকিকা করা মুস্তাহাব। এ সাত দিন কীভাবে হিসাব করতে হবে, জন্মের দিনসহ হিসাব করতে হবে কি না এ নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েন। এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের অভিমত হলো, শিশু যদি রাতে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে পরের দিন থেকে গণনা করে সপ্তম দিন আকিকা করবেন। আর দিনে অর্থাৎ ফজরের পর জন্মগ্রহণ করলে ওই দিন থেকে গণনা করে সপ্তম দিন আকিকা করবেন। যেমন কোনো শিশু বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময় জন্মগ্রহণ করলে তার আকিকা করতে হবে পরবর্তী বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের আগে।
সপ্তম দিন না আকিকা করতে না পারলে চৌদ্দতম দিন, সেই তারিখেও অক্ষম হলে একুশতম দিন বা পরবর্তী যে কোনো দিন আকিকা করা যায়।
যে ধরনের পশু দিয়ে আকিকা করা যাবে
ছয় ধরনের গবাদি পশু দিয়ে আকিকা করা যায়; উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। খাওয়া হালাল এমন যে কোনো পশু দিয়ে আকিকা করা যায় না। যেমন হরিন খাওয়া হালাল হলেও হরিন দিয়ে আকিকা করা যায় না।
উট, গরু ও মহিষ এ তিন পশুতে সর্বোচ্চ সাত শিশুর আকিকা করা যাবে। অর্থাৎ একজন, দুজন, তিনজন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাত শিশুর আকিকা হিসেবে একটি পশু জবাই যথেষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাত শিশুর অভিভাবক ওই পশু কেনায় সমান শরিক হবেন এবং সমানভাবে গোশতও ভাগ করে নেবেন।
ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এ তিন পশু দিয়ে এক শিশুর আকিকা করা যাবে। এসব পশু দিয়ে একাধিক শিশুর আকিকা করা যাবে না।
আকিকার পশু জবাই করার দোয়া
আকিকার পশু জবাই করার সময় এই দোয়া পড়বেন:
বাংলা উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা লাকা ওয়া ইলাইকা, হাজিহি আকিকাতু (নবজাতকের নাম বলতে হবে)।
বাংলা অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, হে আল্লাহ এই আকিকা আপনার জন্য ও আপনার দিকে সমর্পিত। এটি অমুকের (নবজাতকের নাম) আকিকা।
মহানবী (সা.) তার নাতি হাসান ও হোসাইনের আকিকার সময় এভাবে দোয়া পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি: ৯/৩০৪)
আকিকার পশুর মাংস কারা খেতে পারবে?
আকিকা ও কোরবানির গোশতের হুকুম একই। কোরবানির গোশতের মতো আকিকার গোশতও শিশুর মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনসহ ধনী-গরিব সবাই খেতে পারবে। কিছু গোশত নিজেরা খাওয়া, কিছু আত্মীয়দের খাওয়ানো এবং দরিদ্রদের কিছু দান করা উত্তম, তবে জরুরি নয়।
ওএফএফ

6 days ago
33









English (US) ·