মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা অন্তত ৪০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাগরে ফেলে দেওয়ার ভয়ংকর অভিযোগ উঠেছে ভারতের বিরুদ্ধে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কায় ভারতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া জোরদার করেছে।
এরই অংশ হিসেবে নয়াদিল্লি থেকে আটক বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে চোখ বেঁধে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তুলে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। খবর এপি।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয় এবং মিয়ানমারের সীমানার ভেতরে একটি দ্বীপে সাঁতরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে তদন্ত শুরু করেছে এবং ভারতকে ভবিষ্যতে এমন অমানবিক আচরণ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছে।
এছাড়া, আসাম রাজ্যের একটি ডিটেনশন সেন্টার থেকে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগও জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক প্রত্যর্পণের যে কোনো প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার আইনজীবীরা আরও অভিযোগ করেন, আটক রোহিঙ্গাদের ভারতীয় সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতে হাজির করা হয়নি, যা গুরুতর আইনি লঙ্ঘন।
তবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগের শুনানিতে জানান, আবেদনে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ নেই। বিচারপতিরা এটি ‘চমৎকারভাবে লেখা গল্প’ আখ্যা দিয়ে আবেদনটি খারিজ করেন এবং ৩১ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, চোখ বাঁধা অবস্থায় যাদের সাগরে ফেলা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কিশোর, বয়স্ক ও একজন ক্যানসার রোগীও ছিলেন। এদের অনেকে মারধর ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ একে ভয়াবহ ও অমানবিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং ভারত সরকারের কাছ থেকে পূর্ণ ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।

5 months ago
36









English (US) ·